আমিরুল কবির সুজন.মিঠাপুকুর।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নের আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দারা জরাজীর্ণ ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বৃষ্টি হলেই পলিথিন মুড়িয়ে রাত পার করেন এখানকার বাসিন্দারা।
২০০২ সালে বিএনপি সরকার আবাসনের ঘরগুলো নির্মাণ করে সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করেন। তারপর দীর্ঘ ২৩ বছরে আর কোন সংস্কার কাজ হয়নি। এরফলে ভাঙ্গাচোড়া ঘরে কোন রকমে দিনযাপন করছেন এখানকার মানুষজন। স্থানীয়দের মতে বিএনপি সরকার ঘরগুলো নির্মাণ করায় বিগত সময়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ঘরগুলো সংস্কারের ছোঁয়া পায়নি। ফলে আবাসনের বাসিন্দারা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
[caption id="attachment_1467" align="aligncenter" width="1020"] -ঘরের টিন নষ্ট হয়ে ফাকা পড়ে আছে।[/caption]
আবাসন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ঘরই জরাজীর্ণ। টিনফুটো, ঘরের ছাউনি ভাঙ্গা, দরজা নেই, টয়লেট ভাঙ্গা, পানির জন্য প্রয়োজনীয় টিউবওয়েল নেই। অনেকেই টিনশেড ঘরগুলোর ওপরে পলিথিন বা ট্রিপল দিয়েছেন। তবুও বৃষ্টি হলে রক্ষা মেলে না এখানকার বাসিন্দাদের। বৃষ্টির পানি ভেতরে পড়ে ভিজে যায় ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিস ও আসবাবপত্র। বেশি বৃষ্টি হলেই ঘরগুলো পানিতে টইটুম্বুরও হয়ে যায়।
আবাসনের বাসিন্দা আনিছুর রহমান বলেন, সবাই আইসে আর ছবি তুলি নিয়া যায়, কিন্তুক হামার ঘরের টিন নাগায় না। ঝড়ি আসলে হামার ঘুম হয়না বাবা। কেউ হামার খবর নেয় না।
আরেক বাসিন্দা গোলসেনারা বেগম বলেন, বিএনপির সময় ঘর পাছি, তারপর আর কেউ খবর নেয় নাই। ঘর সরকারের, জমি সরকারের। ধারদেনা করি যে ঘরগুলা ঠিক করমো তাও পারিনা। হমার পাকে কেউ দেখেনা বাবা।
[caption id="attachment_1468" align="alignnone" width="1020"] -টয়লেটের দরজা নেই, ছবিতে ভাঙ্গা টয়লেট দেখা যাচ্ছে।[/caption]
আরেক বয়োবৃদ্ধা করিমন্নেছা বেগম বলেন, বেশি বৃষ্টি হইলে ঘরের কোনায় বা চকির নিচে থাকতে হয়। কখন বৃষ্টি কমবে সেই আশায় পলিথিন মুড়িয়ে বসে থাকি, এটা কোন জীবন। ঘরের বেড়ার টিনগুলোও এখন মরীচিকা ধরে ঝাঁজরা হয়ে গেছে। এখানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে থাকতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। এখন ঘরগুলো মেরামতের অবস্থায় নেই। তাই এই আবাসনের ঘরগুলো পুনঃনির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
রানীপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু ফরহাদ পুটু বলেন, আবাসনের বাসিন্দারা খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বৃষ্টির সময় তাদের দুর্ভোগ মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়। উপজেলা মাসিক সভায় বিষয়টা আমি কয়েকবার তুলে ধরেছি কিন্তু কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। খুব শিঘ্রই এখানকার ঘর ও রাস্তাটি সংস্কার করা প্রয়োজন।
মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, বর্তমানে এ প্রকল্পগুলোর কোন কাজ হচ্ছে না। নতুন করে প্রকল্প আসলে এগুলো সংস্কার কিংবা নতুন ঘর নির্মাণ করা সম্ভব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও'র অতিরিক্ত দায়িত্ব) মুলতামিস বিল্লাহ বলেন, আবাসনের ঘরগুলো সংস্কার বা পূর্ণনির্মাণ করার জন্য বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ পেলে কাজ করা সম্ভব হবে। বিষয়টি উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে অবগত করা হবে।
এম কন্ঠ/এস