স্টাফ রিপোর্টার:
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের ছড়ান গ্রামের ইলিয়াস হোসেনের সন্তান রবিউল ইসলাম মাহি। ২৭ বছর বয়সী তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) মাহি। রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে মাস্টার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। তার পরীক্ষার কেন্দ্র রংপুর সরকারি কলেজে।
বড় রবিউল ইসলাম মাহি ৭ বছর বয়সে বুঝতে পারেন অন্যদের থেকে তিনি আলাদা। তখনই তিনি খালাশপীরহাটে চলে যান। প্রায় ১৮ বছর ধরে তিনি পীরগঞ্জের খালাশপীর হাটে হিজড়া সর্দার সাইফুল ইসলাম স্মৃতির সাথে বসবাস করছেন। সেখানে দেশের বিভিন্ন স্থানের অর্ধ শতাধিক তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিক বসবাস করেন বলে জানা গেছে।
রবিউল ইসলাম মাহি মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি, ২০১৫ সালে ছড়ান দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে এসএসসি, ২০১৭ সালে কেশবপুর টেকনিকেল এন্ড বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ২০২০ সালে খালাসপীর বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ থেকে বিএসএস পাশ করেন। এরপর তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে এমএ ১ম বর্ষে ভর্তি হন এবং এমএ ১ম বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নেন।
পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি অন্যের উপকারসহ ধর্মীয় ও সমাজসেবামূলক কাজ করেন বলে জানা গেছে।
২০১৯ সালে তাকে সরকারিভাবে পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর তাকে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয় এবং ভাতাভোগী করা হয়। তিনি ব্লাড ডোনেশন সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত।
মাহি বলেন, আমি মাস্টার্স শেষে পরিবার পরিকল্পনা বা সমাজ সেবা বিভাগে সরকারি চাকরি করে মানুষের সেবা করতে চাই। কারণ আমি তো বিয়েও করতে পারবো না। আমরা প্রতিটি পদেই বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমার জীবনের কোন পিছুটান নেই। আমি গরিব ও অসহায় রোগীদের বিনা টাকায় ব্লাড ম্যানেজ করে দেই এবং আমিও ব্লাড দেই। এছাড়াও মসজিদ ও মাঠ উন্নয়ন, ওয়াজ মাহফিল পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানেও আমার সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করি। আমি ভূমিহীন।
এম কন্ঠ/এস