অনলাইন ডেস্ক
দুই দিনের ব্যবধানে দেশের দুটি শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। আর গত ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন।
দুই দিনের ব্যবধানে অনুষ্ঠিত এই দুই নির্বাচনে বেশ কিছু মিল লক্ষ করা গেছে। নির্বাচনের শুরু থেকে ফল গণনা পর্যন্ত এসব মিল লক্ষ্য করা যায়।
দুই নির্বাচনে যেসব মিল পাওয়া গেল :
এক. নির্বাচনে কারচুপি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ : ডাকসু ও জাকসু দুই নির্বাচনেই অনিয়ম-কারচুপি-অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলেছেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা। এর মধ্যে নির্বাচনে অমোছনীয় কালির পরিবর্তে কিছু ক্ষেত্রে ভোটারদের আঙুলে মোছনীয় কালি ব্যবহার করা, আগে থেকেই পূরণ করা ব্যালট সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে।
দুই. ভোটকেন্দ্রে জোরপূর্বক প্রবেশ ও জাল ভোট : ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ভোট গণনার রুমেও নিয়ম ভেঙে প্রবেশের অভিযোগ পাওয়া যায়। আর জাকসুতে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগও তোলেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা।
তিন. নারী প্রার্থীদের হেনস্তা : উভয় নির্বাচনে নারী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অপ্রচার ও হেনস্তার নানাবিধ অভিযোগ পাওয়া যায়। সব প্যানেলের নারী প্রার্থীরাই এই অপ্রচারের শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে।
চার. স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দাপট : এবারের ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তবে ডাকসুতে সুবিধা করতে না পারলেও জাকসুতে ভিপিসহ ৩ পদে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
পাঁচ. ভোট ও ফলাফল বর্জন : নির্বাচন ও ফলাফল বর্জনের মতো নেতিবাচক দৃষ্টান্ত দেখা গেছে এবারের নির্বাচনে। ডাকসুতে ছাত্রদলসহ একাধিক প্যানেলের প্রার্থীরা ভোট গণনার পর ফলাফল বর্জনের ঘোষণা দেন। তবে জাকসুতে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার আগে ও পরে নির্বাচন বর্জনের ঘটনা ঘটেছে।
ছয়. ছাত্রশিবিরের ভূমিধস জয় : ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে অধিকাংশ শীর্ষপদসহ বিজয়ী হয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল। এর মধ্যে ডাকসুতে ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টি পদে বিজয়ী হয় শিবির সমর্থিত প্রার্থীরা। অন্যদিকে, জাকসুতে জিএস ও দুই এজিএসসহ মোট ২৫টি পদের মধ্যে ২০টি পদে বিজয়ী হয়েছেন শিবির সমর্থিতরা।
সাত. শিবিরের প্যানেলে দম্পতি : ডাকসু ও জাকসু উভয় নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্যানেলে একটি করে দম্পতি অংশ নিয়েছেন এবং তারা উভয়েই নির্বাচনেই বিজয়ী হয়েছেন।
আট. স্লোগান : উভয় নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণার সময় উপস্থিত শিক্ষার্থী ও বিজয়ী প্রার্থীদের একই ধরনের স্লোগান দিতে দেখা গেছে। এসব স্লোগানে জুলাই গণহত্যার দায়ে শেখ হাসিনার বিচার, হিজাবফোবিয়াসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে।
নয়. ভোটের ব্যবধান : ডাকসুর মতো জাকসুতেও বিজয়ী প্রার্থীদের সঙ্গে পরাজিত প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের মধ্যে বড় ধরনের ব্যবধান লক্ষ করা গেছে।
দশ. উদযাপন : স্বাভাবিকভাবে যেকোনো নির্বাচন-পরবর্তী বিজয়ীরা যে ধরনের উদযাপন করে থাকে ডাকসু নির্বাচনের পর তেমনটি দেখা যায়নি। একই প্রবণতা লক্ষ করা গেছে জাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরেও।
সুত্র: কালের কন্ঠ