ভয়াবহ সময় পার করছে ভারত। একদিকে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক উত্তেজনা, অন্যদিকে নতুন করে ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে মরণব্যাধি করোনা। ফিরে এসেছে আতঙ্ক, ফিরে এসেছে সেই অচেনা নিঃশব্দ শত্রু।
ভারতের একাধিক রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার দুই নতুন ভেরিয়েন্ট। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৩১ মে পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছুঁয়েছে প্রায় ৬,৫০০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত ৭০০ জনেরও বেশি। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা কেরালা, মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও গুজরাটে।
কেরালায় আক্রান্তের সংখ্যা ২,৫০০ ছাড়িয়েছে, মহারাষ্ট্রে ৪,৫০০। দিল্লিতে প্রায় ৫০০, গুজরাটে ৪৫০, আর পশ্চিমবঙ্গে ২০০ জনের বেশি আক্রান্ত। বিশেষ উদ্বেগের বিষয়, আক্রান্তদের অনেকে ছিলেন দিল্লির নিজামুদ্দিনে অংশ নেয়া মুসল্লিদের দলে।
রোগীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা ও শ্বাসকষ্টের লক্ষণ। অনেকে ইতোমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বাড়ছে ঘণ্টায় ঘণ্টায়।
এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব রাজ্যকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা, পর্যাপ্ত অক্সিজেন, ওষুধ ও টিকা মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আতঙ্ক নয়, প্রয়োজন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। কিন্তু শুধু ভারতেই নয়, নতুন করে করোনার থাবা পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার আরও কয়েকটি দেশে। পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ডে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া হতে পারে করোনার পরবর্তী কেন্দ্রস্থল।
২০২০ সালে পৃথিবীজুড়ে তাণ্ডব চালায় করোনা। চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস কেড়ে নেয় লাখ লাখ প্রাণ। শুধু ভারতেই মৃত্যু হয় সাড়ে পাঁচ লাখ আর আক্রান্ত হয় সাড়ে চার কোটিরও বেশি।
এখন আবার সেই আতঙ্ক ফিরে এসেছে। সংক্রমণ বাড়ছে, প্রতিদিন নতুন নতুন রাজ্য আক্রান্ত হচ্ছে। যদিও পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি, তবে একটুখানি অসতর্কতাই ডেকে আনতে পারে ভয়াবহ বিপদ।