জীবনযাপনের পদ্ধতিতেই কিছু দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন আনতে হবে। রপ্ত করতে শুরু করুন ভালো অভ্যাসগুলো। তাহলে ইতিবাচক ফল পাবেন।
মাস্ক হোক ফ্যাশনের অনুষঙ্গ
বর্তমানে সংক্রমণের যে ঢেউ উঠছে, সেটি হয়তো আগের মতো ভয়াবহ নয়। তবে তার সংক্রমণের ক্ষমতা আগের মতোই। সংক্রমণ ঠেকাতে গণপরিবহন, বাজার, হাসপাতাল, স্কুল বা কর্মস্থলে মাস্ক ব্যবহারে জোর দিতে হবে। প্রতিদিনের ফ্যাশন ও স্টাইলে মাস্ক অনুষঙ্গ করে তুলুন। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিংবা কনট্রাস্ট রঙে পরুন, সমস্যা নেই। তাতে প্রাথমিক ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া সহজ হবে।
হাত ধোয়ার অভ্যাসই প্রতিরক্ষা
হাত জীবাণুমুক্ত রাখা এখন আর কেবল কোভিড প্রতিরোধের বিষয় নয়, এটি একধরনের নাগরিক সচেতনতা। অফিস, বাসা কিংবা বাইরে—যেখানেই থাকুন, সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার—জীবনের ভালো অভ্যাস হিসেবে রপ্ত করুন।
বিশ্রামে অবহেলা নয়
অসুস্থতা বোধ করলে বিশ্রাম নিন। হালকা উপসর্গও ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে পারে। কাজেই আপনার বিশ্রাম নেওয়া অন্যের সুস্থ থাকার উপায়। প্রয়োজনে করোনা পরীক্ষা করান। পজিটিভ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিশ্রাম নিন এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আইসোলেশনে থাকুন।
টিকা ও বুস্টার ডোজ—সতর্কতার ঢাল
টিকা নেওয়া থাকলে সংক্রমণ হলেও মৃত্যুঝুঁকি এবং জটিলতা অনেকাংশে কম থাকে। তাই যাঁরা এখনো বুস্টার ডোজ নেননি, তাঁরা দেরি না করে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুসারে তা নিয়ে নিন।
মানবিকতার চর্চা করুন
করোনা মানসিক দুরবস্থাও তৈরি করে। কেউ আক্রান্ত হলে বা আইসোলেশনে থাকলে তিনি একা হয়ে পড়েন। তাঁকে এড়িয়ে না গিয়ে পাশে থাকা, প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দেওয়া, কথাবার্তা বলা—এসব মানবিক আচরণ আমাদের সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করবে। ভয় নয়, সচেতন ও সহানুভূতিশীল হোন।
জীবনযাপনে প্রয়োজন স্থায়ী পরিবর্তন
করোনার বারবার ফিরে আসা আমাদের এক কঠিন বাস্তবতা বুঝিয়ে দিয়েছে। তা হলো, আমাদের জীবনযাপন পদ্ধতিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন আনতে হবে। এই পরিবর্তনের কিছু দিক হলো—
» বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহারের অভ্যাস করা।
» কাজের জায়গায় এবং স্কুলে শারীরিক দূরত্বের ন্যূনতম ভদ্রতা বজায় রাখা।
» অসুস্থ হলে দায়িত্ব নিয়ে বিশ্রাম নেওয়া।
» হাত ধোয়ার অভ্যাস স্থায়ী করা।
» ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীরচর্চা করা।
» আত্মসচেতন ও সামাজিক দায়িত্বশীল হওয়া।
করোনা ভবিষ্যতে ভাইরাস হিসেবে আমাদের সঙ্গে সহাবস্থান করবে। একে পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব না-ও হতে পারে। কিন্তু এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা, সংক্রমণ সীমিত করা এবং মৃত্যু রোধ করা আমাদের দায়িত্ব। এর জন্য চিকিৎসাবিদ্যার ওপর আস্থা রাখতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে এবং নিজে সচেতন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যদের সচেতন করতেও এগিয়ে আসতে হবে।
Leave a Reply