স্টাফ রিপোর্টারঃ
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় এক কৃষক পরিবারকে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের রওশন মিয়া নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত রওশন সম্প্রতি আদালতের রায়কে অবমাননা করে ভুক্তভোগী ওই কৃষকের জমিতে ধান রোপনে বাঁধা দিতে যান। এসময় গ্রামবাসীরা তাকে প্রতিহত করলে উল্টো তাকে মারপিট করেছে এমন নাটক সাজিয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অথচ বিরোধকৃত জমি নিয়ে ২০১৮ সালে বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন রওশন আলম। তার করা মামলায় বিজ্ঞ আদালত ভুক্তভোগী কৃষক মোকলেসারের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু তবুও থামছে না অভিযুক্ত রওশনের দাপট। গ্রামের সুশীল সমাজ সংশ্লিষ্টদের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
সরেজমিন জানা গেছে, উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের পাইকান কৃষ্ণপুর মৌজার ১৫৬ নং খতিয়ানে মোকলেছার রহমান ও তার স্ত্রী তাজনুরী বেগমের নামে ৪১ শতক জমি রয়েছে। জমিটির দলিলপত্র এবং সর্বশেষ প্রিন্ট রেকর্ডও রয়েছে। কিন্তু পাইকান কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে রওশন মিয়া (৪০) গত ২০১৪ সাল থেকে উক্ত জমি নিজের দাবি করে একাধিকবার দখলে নেওয়ার পায়তারা করেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় গ্রাম্য শালিসে উভয়পক্ষের দলিলপত্র দেখে রওশনকে অবৈধ দাবিদার প্রমাণিত হয়। এরপর রওশন রংপুর ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে বিজ্ঞ আদালত মামলার রায় ভুক্তভোগী কৃষক মোকলেসার রহমানের পক্ষে দেন।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল ১১ টার দিকে কৃষক মোকলেসার রহমানের ওই জমিতে কৃষি শ্রমিকরা ধান রোপন করছিলেন। এসময় হঠাৎ করে অভিযুক্ত রওশন সেই জমিতে গিয়ে হুমকিধামকি শুরু করেন। একপর্যায়ে সে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কর্মরত কৃষকদের এলোপাতাড়ি মারপিট করেন। এতে কৃষিমজুর জাহাঙ্গীর আলম নামে এক কৃষক আঘাতপ্রাপ্ত হন। খবর পেয়ে জমির মালিক সেখানে গিয়ে উত্তেজিত রওনশ মিয়াকে শান্ত করার চেষ্টা করলে তাদেরকেও মারপিট শুরু করেন। তাদের চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা এগিয়ে আসলে প্রাণে রক্ষা পায় জমির প্রকৃত মালিক কৃষক মোকলেছার রহমান, তার স্ত্রী তাজনুরি বেগম, ছেলে গোলাম রাব্বানী। পরে গ্রামবাসীরা অভিযুক্ত রওশন মিয়াকে শান্ত হতে বললে সে গ্রামবাসীদের উপরেও ক্ষিপ্ত হয়। একপর্যায়ে তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে প্রতিহত করতে তাকে উত্তম মাধ্যম দিয়ে সেখান থেকে পাঠিয়ে দেন গ্রামের বাসিন্দারা। পরে অভিযুক্ত রওশন ঘটনাকে ভিন্নদিকে প্রভাহিত করতে নিজেই নিজের শরীরে আঘাত করে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে মামলা করার হুমকি দিচ্ছেন।
ভুক্তভোগী কৃষকের ছেলে পেশায় শিক্ষক গোলাম রাব্বানী বলেন, আমাদের অহেতুকভাবে দিনের পর দিন হয়রানি করে আসছে। আমরা মানসম্মানের ভয়ে কিছু বেশিকিছু করতে পারিনা। গ্রামবাসীকেও সে মানেনা। এখন শুনছি আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে কৌশল অবলম্বন করছে। আমরা সঠিক বিচার চাই।
অভিযুক্ত রওশনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার বাড়িতে গেলে এ বিষয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি অপারেশন) হাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এম কন্ঠ/এস/২০২৫
Leave a Reply