
ডেস্ক রিপোর্ট:
বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ মৃত্যুর ২৯ বছর পর এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলাটি তদন্তের জন্য রমনা থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০ অক্টোবর ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ আদেশ দেন। বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরীর আইনজীবী ফারুক আহমেদ।
তিনি জানান, পিবিআই সালমান শাহের মৃত্যুর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত করেনি বলে নীলা চৌধুরী ২০২১ সালে পিবিআইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে নারাজি দেন। আজ আদালত সেই রিভিশন আবেদন মঞ্জুর করে হত্যা মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন।
আইনজীবী ফারুক আহমেদ আরো বলেন, সালমান শাহের মৃত্যুর দিনই পুলিশ পরিবারের অজান্তে তার বাবা কমর উদ্দিন চৌধুরীর স্বাক্ষর নিয়ে রমনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করে। পরে ১৯৯৭ সালে রিজভি আহমেদ নামে এক আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি দেন যে, সালমান শাহকে হত্যা করে আত্মহত্যা হিসেবে সাজানো হয়েছিল। এরপর সালমানের বাবা কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে নালিশি হত্যা মামলা করেন। এখন তাদের বিরুদ্ধেই হত্যা মামলা চলবে।
এ আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করে সালমান শাহের মামা ও চলচ্চিত্র পরিচালক আলমগীর কুমকুম বলেন, ‘আমরা খুশি। সালমান আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা খুনিদের বিচার চাই।’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইয়ের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম ঢাকার সিএমএম আদালতে ৬০০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন, যেখানে বলা হয় সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন। প্রতিবেদনে আত্মহত্যার পাঁচটি কারণ উল্লেখ করা হয়।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিউ ইস্কাটন গার্ডেন এলাকার ভাড়া বাসা থেকে সালমান শাহের লাশ উদ্ধার করা হয়। তখন তার জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। স্ত্রী সামিরা হক জানিয়েছিলেন, সকালে ঘরের ড্রেসিংরুমে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমানকে পাওয়া যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে ১৯৯৭ সালে সিআইডি সালমান শাহের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেয়। পরবর্তীতে সালমানের বাবা ও মা উভয়েই রিভিশন আবেদন করেন, এবং একাধিক তদন্ত সংস্থা ও বিচার বিভাগীয় অনুসন্ধানের পরও মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হয়নি। আজকের আদালতের নির্দেশে অবশেষে এই ঘটনা হত্যা মামলা হিসেবে পুনঃতদন্তের পথে এগোচ্ছে।
Leave a Reply