1. mithapukur24barta@gmail.com : Mithapukur : Mithapukur
  2. admin@mithapukurerkantho.com : মিঠাপুকুরের কন্ঠ :
বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন

যে আগুনে দ্বিগুণ হলো ছাত্র-জনতা

  • প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫
  • ৪ বার পাঠ করা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টারঃ
যৌবন তুমি আগুন হও; লাল পলাশের ফাগুন হও। আসছে ফাগুন অনেক দেরি; এই আগুনেই দ্বিগুণ হও।  ১৬ বছর শাসন করা একটি সরকার যার প্রভাব, বিস্তৃতি দেশের আনাচে কানাচে। 

কীভাবে পতন হলো সেই সরকারের? স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা কোন অনুপ্রেরণায় স্বৈরাচার হটানোর সাহস পায়? আন্দোলনে যুক্ত করে নেয় শ্রমিক, চাকরিজীবী, গৃহিণী থেকে শুরু করে দেশের আপামর জনতাকে?

১ জুলাই ২০২৪। সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নামেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে অবস্থান নেন কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে। ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’ স্লোগানে মুখরিত হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ।

১৪ জুলাই শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের রাজাকার সম্বোধন করলে, তুমি কে, আমি কে? রাজাকার, রাজাকার স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে দেশের শিক্ষার্থীরা। ১৫ জুলাই হাসিনা সরকারের পেটুয়া বাহিনী হামলা চালায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর। 

এক নারী শিক্ষার্থীর গা থেকে রক্ত ঝরা ছবি তখন পুরো ফেসবুক জুড়ে।  আগুন ছড়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত। সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি সফল করেন।

১৬ জুলাই। রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ হত্যার ভিডিও তখন কাঁদিয়েছে দেশের মানুষদের। তখন সড়কে সড়কে শিক্ষার্থীরা গ্রাফিতি আঁকেন, বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর” চাকরি না দিবি না দে, হামার বেটাক মারলু কেন? এসব স্লোগান হয়ে ওঠে  আন্দোলনের প্রেরণা। 

এরপর আন্দোলন তুঙ্গে। বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙ্গা, কে আছো জোয়ান, হও আগুয়ান, জানি বলবা তোমার হাত পা বাঁধা, দেশটা তোমার বাপের নাকি, কী করেছে তোমার বাবা, কী করেছে স্বামী, শ্মশান বাংলা ভালো নেই; এসব গান উজ্জীবিত করে ছাত্রসমাজ সহ দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণকে। 

১৮ জুলাই আন্দোলনকারীদের খাবার পানি বিতরণ করতে গিয়ে গুলিতে ‍নিহত হন মীর মুগ্ধ। এই ঘটনার পর যেন জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি হয়ে ওঠেন একেকজন শিক্ষার্থী। বন্ধ করে দেয়া হয় ইন্টারনেট। প্রতিমন্ত্রী পলকের বক্তব্য, ইন্টারনেট বন্ধ করিনি, বন্ধ হয়ে গেছে যেন যুদ্ধের মাঠে সৈনিকদের হাসির খোড়াক জুগিয়েছে। দৃঢ় করেছে সংযোগ। 

এরপর ‘স্বজন হারানোর বেদনা’ দিয়ে আর ভুলানো যায়নি বাংলাকে। মাঠে নামেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। পুলিশ বাহিনীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে ভাইয়ে ঢাল হয়ে দাঁড়ান বোন। শিক্ষার্থীদের চোখে মুখে সরকারবিরোধী আগুন ফুটে ওঠে স্লোগানে, ছবিতে। 

একের পর এক হত্যাকাণ্ডের পর আন্দোলন শুধু কোটা সংস্কারে সীমাবদ্ধ থাকেনি। শহীদদের রক্তের প্রতীক হিসেবে ফেসবুক প্রেফাইল লাল করেছেন দেশের আপামর জনতা।  তখন চাওয়া একটাই- দফা এক, দাবি এক, খুনি হাসিনার পদত্যাগ। 

৪ আগস্ট ফার্মগেট এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী নাফিজের মরদেহ একটি রিক্সায় করে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করে সহযোদ্ধারা। সেই ছবি যেন আগুন ধরায় রক্তে। বাংলায় একবার রক্ত ঝরিয়েছিলো পাকিস্তানিরা। 

তবে স্বাধীন বাংলায় সোনার সন্তানদের রক্ত ঝরবে এ যেন আর মেনে নিতে সাধারণ মানুষ।  পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‌্যাব, হেলমেট বাহিনীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই শুরু হয় লং মার্চ টু ঢাকা।  গণভবনের দিকে যাত্রা করেন দেশের সব স্তরের জনতা। ৫ আগস্ট বাধ্য হয়ে পলায়ন করে ১৬ বছর ধরে সিংহাসন আগলে ধরে রাখা স্বৈরাচার।

এম কন্ঠ/এস/২০২৫

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © mithapukurerkantho.com