1. mithapukur24barta@gmail.com : Mithapukur : Mithapukur
  2. admin@mithapukurerkantho.com : মিঠাপুকুরের কন্ঠ :
রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১৪ অপরাহ্ন

মিঠাপুকুরে প্রশাসনের ভুলে ভাঙ্গলো বসতবাড়ি খোলা আকাশের নিচে তিন কৃষক পরিবার

  • প্রকাশিত : সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫
  • ২৩৯ বার পাঠ করা হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টারঃ
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় এ্যসিল্যান্ড ও উচ্ছেদ অভিযানের সংশ্লিষ্টদের ভুলে তিনটি কৃষক পরিবার খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। আদালতের নির্দেশে অভিযান পরিচালনা করার সময় সঠিকভাবে জমির সার্ভে না করে ভুল দাগে অভিযান করেন অভিযানিক দায়িত্বপ্রাপ্তরা। আর সেই ভুলের মাশুল দিচ্ছেন তিনটি গরীব পরিবার। এদিকে দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিলেও কোন সুফল মিলছে না ভুক্তভোগীদের।

রবিবার (২৪ আগস্ট) দুপুর ৩ টার দিকে বসতবাড়ি ভেঙ্গে ফেলার সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং পূর্ণবাসনের দাবিতে মিঠাপুকুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা।

মিঠাপুকুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীরা

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত কাগজপত্র সুত্রে জানা গেছে, মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নের বলদিপুকুর নয়াপাড়া মৌজায় মৃত: এছার উদ্দিনের দুই ছেলে সাখাওয়াত মিয়া ও এছাহাক মিয়া মিঠাপুকুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে জমিজমা সংক্রান্ত মামলা করেন। মামলায় বলদিপুকুর নয়াপাড়া মৌজায় ২৬৪৪ দাগে দখল স্বত্বের দাবি উল্লেখ করা হয়। গত ৩ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালত মামলার বাদী সাখাওয়াত হোসেনের পক্ষে একতরফা রায় দেন। এরপরে সাখাওয়াত হোসেনকে ২৬৪৪ দাগের নালিশকৃত জমি দখল-স্বত্ব বুঝে দিতে উচ্ছেদ অভিযানের জন্য মিঠপুকুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মুলতামিস বিল্লাহকে নির্দেশ দেন বিজ্ঞ আদালত।

নির্দেশমতে গত ২৮ জুলাই সহকারী কমিশনার ভূমি ও বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, নাজির, সার্ভেয়ার, শ্রমিকসহ উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে ২৬৪৪ দাগের পরিবর্তে ২৬৪৫ দাগে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। আর এই ভুল দাগে উচ্ছেদ অভিযান করার কারণে খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন তিনটি অসহায় কৃষক পরিবার। ভুক্তভোগীদের থাকার ১৫ টি টিনসেড ঘর ভেঙ্গে চুরমার করে জায়গা ফাঁকা করেন অভিযানিক দল। এ সময় উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের বারবার সঠিক তথ্য বোঝাতে চাইলেও ভুক্তভোগীদের কথা কেউ কর্ণপাত করেননি।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অশ্রুসিক্ত কন্ঠে রুপালি বেগম, আব্দুল মোন্নাফ, মহিয়ার ও আব্দুর রহিম বলেন, আমাদের মাথা গোঁজার কোনো ঠাঁই নেই। স্কুল ঘর এবং গাছতলায় আমরা বসবাস করছি। ছেলেমেয়ে সহ নিদারুণ কষ্টে দিন যাচ্ছে। আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেওয়া এ্যাসিল্যান্ড মুলতামিস বিল্লাহ
প্রভাবিত হয়ে দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছেন। এসময় তারা নিজেদের বাড়িঘর ফেরত সহ পুর্ণবাসনের দাবি জানান।

জমি দখলে নেওয়া মামলার বাদী সাখোয়াত হোসেন বলেন, আদালত আমাকে যে জমি বুঝে দিয়েছে সেটাই আমার। আমি ভুল শুদ্ধ বুঝিনা। ওরা মামলা করে আদালতের রায় নিয়ে আসুক। তার আগে জমিতে কেউ আসলে তার লাশ পড়বে। আপনার বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা আছে এবং আপনি প্রশাসনে তদবির করে জমি দখল করেছেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আগে মাদক ব্যবসা করেছি এখন করিনা মামলা থাকতেই পারে।

মিঠাপুকুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেওয়া এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মুনতামিস বিল্লাহ বলেন, আমি আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করেছি। আদালত কর্তৃক নিযুক্ত নাজির জমি সার্ভে করেছে। এটা ভুল হলে তাদের বিষয়। ভুক্তভোগীরা চাইলে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে।

মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিল্লুর রহমান বলেন, এটা জজ কোর্টের সার্ভেয়ার ও নাজির দাগ নির্ণয় করেছে। তারা ভুল জায়গায় সার্ভে করেছে। এটা তাদের ভুল। এখানে আদালতের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে। ভুক্তভোগীরা চাইলে ক্ষতিপূরণসহ উচ্চ আদালতে মামলা করতে পারে।

এম কন্ঠ / এস/ ২০২৫

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © mithapukurerkantho.com