স্টাফ রিপোর্টার:
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ইমাদপুর ইউনিয়নে এক গৃহবধুকে ঘর ছাড়া করতে শশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি গত প্রায় এক বছর ধরে ওই গৃহবধূর স্বামী আত্মগোপনে রয়েছেন। এমতাবস্থায় এক কন্যা সন্তান নিয়ে চরম কষ্টে দিনযাপন করছেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। এছাড়াও তাকে ঘরছাড়া করতে মিথ্যা অপবাদ রটানোর পাশাপাশি, ঘরের দরজা জানালায় মল-মুত্র রেখে মানসিক চাপে রাখারও অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। ওই গৃহবধূর স্বামী আত্মগোপনে থাকায় সমস্যা সমাধানে দেখা দিয়েছে জটিলতা।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর নাম শ্রীমতি মিনতি রানী (২৯) তিনি উপজেলার ইমাদপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের রনজিৎ চন্দ্রের ছেলে অভিমূন্য চন্দ্র বর্মণের (৩৫) স্ত্রী।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলার ডাঙ্গামোড় গ্রামের মনোরঞ্জন বর্মণের মেয়ে মিনতি রানীর (২৯) সাথে মিঠাপুকুর উপজেলার ইমাদপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের অভিমূন্য চন্দ্র বর্মণের হিন্দু ধর্মীয় রীতিতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবনে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। কন্যা সন্তানটি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বছর দুয়েক আগে স্বামী অভিমূন্য চন্দ্র চাকুরির কথা বলে ঢাকা শহওে চলে যায়। তারপর বাড়িতে তার স্ত্রী-কন্যার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এরপর যে বাড়িতে গৃহবধূ তার একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন সেই বাস্তভিটা বিক্রি করার পায়তারা শুরু করেন শশুর-শাশুড়ি। এতে গৃহবধূ মিনতি রানীর সন্দেহ হলে বিষয়টি এলাকাবাসীকে জানান। পরে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন শুরু হলে অভিমূন্যের বাবা-মা জানান, তাদের ছেলে গৃহবধূ মিনতি রানীকে ডিভোর্স দিয়েছে। এখন মেয়েকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতার পাশাপাশি মানসিক দূরচিন্তায় দিনযাপন করছেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। ওই গৃহবধূর মামা শশুর মৃনাল চন্দ্রের সবকিছুর পিছনে হাত রয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী মিনতির। তার অভিযোগ মামাশশুরের কথায় আমার স্বামী ও শশুর শাশুড়ী বাড়িঘরসহ সবকিছু বিক্রি করে ভারতে পালাতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গৃহবধূ মিনতি রানী স্বামীর বঞ্চনার শিকার হলেও মেয়েকে নিয়ে আছেন। কিন্তু এখন তার থাকার ঘর থেকেও বের করে দেয়ার চক্রান্ত চলছে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ মিনতি রানী বলেন, ১০ বছর আগে শাঁখাসিঁদুর পরে স্বামীর বাড়ি এসেছি। আমাদের একটা মেয়ে আছে। এখন স্বামীও খোঁজ নেয় না। আবার শশুর শাশুড়ি বাড়িঘর বিক্রি করবে বলছে। আমি এখন কোথায় যাবো। সমাজ এবং আইনের সহযোগিতায় আমি ন্যায্য বিচার চাই। আমার যাওয়ার কোন জায়গা নেই।
অভিমূন্যের মা উষা রানী বলেন, ছেলে মাঝেমধ্যে মোবাইল করে। কিন্তু কোথায় থাকে সেটা বলেনা। আমার বউ এর আগে মামলা করেছে। ওই মামলা চালাতে জমিজমা বিক্রি করা লাগছ্।ে এখন সমস্যা আরও জমি বিক্রি করা লাগবে।
ইমাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টা নিয়ে বসা হয়েছিল। পুলিশও আসছিল। কিন্তু সমাধান করা সম্ভব হয়নি৷ ছেলেটা আসলে, মনে হয় কোন একটা সমাধান করা সম্ভব হতো।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টা নিয়ে নতুন করে কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। তারপরও বিট অফিসারকে বিষয়টা বলবো। অভিযোগ পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
Leave a Reply