1. mithapukur24barta@gmail.com : Mithapukur : Mithapukur
  2. admin@mithapukurerkantho.com : মিঠাপুকুরের কন্ঠ :
রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন

মিঠাপুকুরে ছড়াচ্ছে আ্যানথ্রাক্স, আতঙ্ক নয় প্রয়োজন সচেতনতা

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৮২ বার পাঠ করা হয়েছে
-আ্যানথ্রাক্স, আতঙ্ক নয় প্রয়োজন সচেতনতা

স্টাফ রিপোর্টারঃ
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ছে আ্যানথ্রাক্স। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ রোগে আতঙ্ক নয়, প্রয়োজন জনসচেতনতা।

মানুষের খাদ্য তালিকায় থাকা গরু-ছাগলের মাংস শরীরের জন্য উপকারী হলেও অসুস্থ গরু-ছাগলের কাঁচা মাংস থেকে অ্যানথ্রাক্সের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। উত্তরাঞ্চলে প্রথমে অ্যানথ্রাক্স সনাক্ত হয় রংপুরের পীরগাছা উপজেলায়। এরপর সম্প্রতি মিঠাপুকুর ও কাউনিয়া উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের রোগী পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ গবাদিপশুকে অ্যানথ্যাক্স প্রতিরোধী টিকা দিচ্ছেন। মসজিদ, মন্দির হাটবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে সচেতনতা কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যানথ্রাক্স হলো ব্যাসিলাস অ্যাথ্রাসিস নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ঘটিত একটি রোগ; যা প্রথমত গবাদিপশুকে আক্রান্ত করে। আক্রান্ত পশুদের দ্বারা পরবর্তী পর্যায়ে মানুষ আক্রান্ত হয়। তাই অ্যানথ্রাক্সকে জুনোটিক ডিজিজ বলা হয়। মানুষ থেকে মানুষে এ রোগ ছড়ায় না।

নিয়ম অনুযায়ী, গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সনদ ও প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে লাইসেন্স পাওয়া বাধ্যতামূলক হলেও অধিকাংশ ব্যবসায়ীর কাছে এসব নেই। ফলে রোগাক্রান্ত পশুর মাংস সরাসরি মানুষের খাদ্যচক্রে প্রবেশ করছে। এর মধ্য দিয়ে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও খাদ্য নিরাপত্তা একসঙ্গে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে। পশুর রোগ ছড়াচ্ছে মানবদেহে। ইতোমধ্যে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) বিশেষজ্ঞরা জেলার পীরগাছা, মিঠাপুকুর ও কাউনিয়া উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করেছেন। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, মাংস ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে এবং রোগগ্রস্ত পশুর রক্ত-মাংসের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা জরুরি।

লক্ষণ
#অ্যানথ্রাক্স প্রধানত তিনভাবে হয়ে থাকে ত্বকের (কিউটেনিয়াস), শ্বাসনালী (ইনহেলেশনাল) এবং পরিপাকতন্ত্র/পেট সংক্রান্ত (গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল) অ্যানথ্রাক্স।
#ত্বকের অ্যানথ্রাক্সে প্রথমে ছোট একটি চুলকানিযুক্ত ঘা দেখা যায়, পরে তা ফোস্কা ও কালো কেন্দ্রবিশিষ্ট আলসারে পরিণত হতে পারে।
#শ্বাসনালী অ্যানথ্রাক্সে initially ফ্লু সদৃশ লক্ষণ (জ্বর, কাশি, কাশি বাড়া) দেখা যায়, পরে শ্বাসকষ্ট ও গুরুতর জটিলতা হতে পারে।
#গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অ্যানথ্রাক্সে বমি, তীব্র পেটব্যথা, রক্তমিশ্রিত দস্ত ইত্যাদি দেখা যেতে পারে।

যেভাবে অ্যানথ্রাক্স ছড়ায়
সংক্রামিত পশু (গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ) কিংবা তাদের দেহাংশ, রক্ত বা পশু পণ্য (চামড়া, উল) থেকে মানুষের সংক্রমণের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। রোগতত্ত্ব, নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মেহেরজাদী সাবরিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন- বাংলাদেশে অ্যানথ্রাক্স সাধারণত পশু পালনে পরিচালিত কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় বেশি দেখা যায়। পশু জবাই, মাংস কাটাকাটি ও সংস্পর্শে চামড়া-কাটা থাকা ক্ষত থাকলে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশুর মাংস খেলে কি হবে?
আইইডিসিআরের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশুর কাঁচা বা অপূর্ণভাবে রান্না করা মাংস খেলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অ্যানথ্রাক্সের ঝুঁকি থাকতে পারে। তবে দেশের প্রচলিত পদ্ধতিতে সম্পূর্ণরূপে রান্না করলে জীবাণুর টিকে থাকার সম্ভাবনা কম। তবুও অনুরোধ করা হচ্ছে অসাধু উৎস থেকে সস্তায় বিক্রি হওয়া সন্দেহজনক মাংস বর্জন করুন।
 
কি সতর্কতা নেবেন (করণীয়)
#সন্দেহভাজন বা অসুস্থ পশু, তাদের দেহাংশ ও পশু পণ্য থেকে দূরে থাকুন।
#পশু জবাই, মাংস কাটাকাটির সময় গ্লাভস ও উপযুক্ত সুরক্ষা ব্যবহার করুন, কাঁচা মাংস আলাদা পাত্রে রাখুন এবং ভালভাবে রান্না করে খান।
#পশু পালনে যুক্তরা নিয়মিতভাবে তাদের পশুকে অ্যানথ্রাক্স টিকা করিয়ে নিন।
#অ্যানথ্রাক্স সন্দেহভাজন মৃত পশু দ্রুত মাটির নীচে পুতে দিন, স্থানীয় পশুপালন বা স্তন্যপান নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিক জানানো ও নির্দেশনা নিন।
#বারবার হাত ধোয়া ও প্রচলিত স্বাস্থ্যবিধি মানুন, ব্যক্তিগত জিনিসপত্র অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
#অস্বাভাবিক ত্বকের ঘা, জ্বর বা শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান ও চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

এম কন্ঠ/ এস

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© All rights reserved © mithapukurerkantho.com