পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, দূষণ, বন ধ্বংস, পাহাড় কাটা, নদী দখল এবং কৃষিজমির মাটি লুটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পরিবেশ সুরক্ষার প্রশ্নে আমরা কোনো আপস করবো না। দেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপদ বাতাস ও খাদ্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে, এবং এই অধিকার নিশ্চিত করতে প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও জনগণকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার, রংপুরে আয়োজিত “দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের উপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ” বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, একটি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নির্মল বাতাস ও বিশুদ্ধ খাদ্য নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু দূষণের কারণে ৬ থেকে ৮ বছর কমে যাচ্ছে। যদি আমরা আজই কার্যকর ব্যবস্থা না নেই, তবে আগামী প্রজন্ম ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে, বলেন তিনি। তিনি প্রশাসনকে আহ্বান জানান পরিবেশগত আইন প্রয়োগে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে এবং দূষণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।
উপদেষ্টা বিশেষভাবে পলিথিন দূষণের বিরুদ্ধে ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ২০০২ সালে নিষিদ্ধ হওয়ার পরও পলিথিনের ব্যাপক ব্যবহার আমাদের পরিবেশকে ধ্বংস করছে। অবিলম্বে উৎপাদন ও ব্যবহারের কেন্দ্রগুলোতে অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ পলিথিন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে।
তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিস্তার সুরক্ষা আজ সময়ের দাবি। এই নদীর প্রবাহ ঠিক রাখা শুধু পরিবেশের জন্য নয়, কৃষি ও জনজীবনের সুরক্ষার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শব্দদূষণ রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপরও তিনি গুরুত্ব দেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে হর্ন বাজানো বন্ধে গণসচেতনতা তৈরি করতে হবে। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি মানুষের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনও জরুরি, বলেন তিনি।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অনুমোদনবিহীন ইটভাটা এবং পরিবেশ বিধ্বংসী শিল্পের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনার জন্য তিনি তিনি প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি নির্দেশনা প্রদান করেন।উপদেষ্টা তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, আজ যদি আমরা আমাদের নদীগুলো রক্ষা না করি, তাহলে আগামী প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না। পরিবেশ সুরক্ষা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, এটি আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব।
এই কর্মশালায় রংপুর বিভাগের প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।